চাকরির পাশাপাশি কি ব্যবসা করা যায়

আজকাল জীবনে খরচ বেড়ে যাওয়াই এবং অধিক নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা আমাদের অনেকেই চাকরির পাশাপাশি একটি বাড়তি আয়ের উচ্চ খুঁজতে বাধ্য করছে। চাকরির পাশাপাশি ব্যবস্থা করা সম্ভব এবং এটি আপনার অর্থনৈতিক অবস্থাকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। তবে এটি পরিকল্পিত এবং সঠিকভাবে সময় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে করতে হবে। 

চাকরির পাশাপাশি কি ধরনের ব্যবসা করবেন



চাকরির পাশাপাশি কোন কোন ব্যবস্থা আপনি করতে পারেন এবং কিভাবে শুরু করবেন তা নিয়ে কিছু আলোচনা করা হলো যেমন-ব্যবসার মাধ্যমে ব্যক্তি আয় আপনাকে আর্থিকভাবে আরো স্বাভাবিক মেয়ে হতে সাহায্য করবে। একটি চাকরি থাকা অবস্থায় ব্যবসা শুরু করলে আর্থিক ঝুঁকি অনেক কম থাকে। তাই উদ্যোক্তা মানসিকতা করে তুলে ছোট ব্যবসা শুরু করলে আপনি একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তাই নতুন ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে আপনি নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। 

পেজ সূচিপত্র: ব্যবসা শুরু করার আগে যা করতে হবে 



ব্যবসা শুরু করার আগে যা করতে হবে

চাকরির ব্যবস্থা পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে প্রতিদিন কাজের সময়সূচী ভেবে কাজ শুরু করতে হবে। চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার সময় একটি নির্দিষ্ট সময় বের করতে হবে যাতে আপনার কাজ এবং ব্যবসার মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকে। ব্যবসা শুরু করার জন্য কতটা পুঁজির প্রয়োজন এবং এটি আপনি কোথায় থেকে সংগ্রহ করবেন তা নির্ধারিন করতে হবে। 


আপনার চাকরি প্রতিষ্ঠানে নীতিমালা ভালো ভাবে জেনে নিন অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী বাইরের ব্যবস্থা করার নিষিদ্ধ হয়ে থাকে। তাই আপনার সময় এবং দক্ষতা ও আগ্রহ অনুযায়ী এমন একটি চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা বেছে নিন যা পুরো রান্না করার সহজ এবং লাভজনক। 

চাকরির পাশাপাশি কি ধরনের ব্যবসা করবেন

চাকরির পাশাপাশি কি ধরনের অবশ্য শুরু করার মত কিছু সম্ভাব্য ব্যবসার ধারণা নিম্নরূপ যেমন-ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা শুরু করতে পারেন কিছু জনপ্রিয় অনলাইন ব্যবসার ধারণা হলো ই-কমার্স স্টোর, ফ্রিল্যান্সিং সেবা, ড্রপ শিপিং, ইউটিউব ব্লা ব্লগিং করা ইত্যাদি। এছাড়াও খাদ্য ও পানীয় ব্যবস্থা যেমন-ফুড ডেলিভারি, স্টেট ফুড বা কফি, ইসলামিক বা অর্গানিক ফুড প্রোডাকশন করে আপনি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 




তাছাড়াও পরিবেশ ভিত্তিক ব্যবসা যেমন-ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, পরামর্শ প্রদান, বাড়ি ভাড়ার ব্যবসা ইত্যাদি। এছাড়া চাকরির পাশাপাশি আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তাই আপনি বসে না থেকে এখন থেকেই কি ব্যবসা করার কাজ উদ্যোগ নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে ব্যবসা শুরু করে দিন।

ব্যবসা পরিচালনার জন্য কিছু পরামর্শ

চাকরির পাশাপাশি ব্যবসার জন্য একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা তৈরি করুন এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এতে আপনি ধাপে ধাপে এগোতে পারবেন। ব্যবসার বিভিন্ন কার্যক্রম সহজ করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করুন। আপনি ব্যবসয় গ্রাহকদের
সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন এবং তাদের চাহিদার প্রতি মনোযোগ দিন।

প্রথমদিকে ব্যবসা সফলতার নাও আসতে পারে এ ক্ষেত্রে ধৈর্য এবং নিষ্ঠা ধরে রাখুক তাহলে সফলতার চাবিকাঠি অবশ্যই আসবে। আপনার পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, অনেক সময় পরিচিতদের মাধ্যমে ব্যবসার জন্য নতুন সুযোগ আসে। তাই অতি শীঘ্রই চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করুন। 

ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে ব্যবসা শুরু করা 

চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করতে গেলে কিছু ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ থাকে সেগুলো হলো ব্যবসার জন্য যথেষ্ট সময় না দেওয়া ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে উন্নতি হয় না। তাই ঠিকমতো  ব্যবসায় সময় দিন। এছাড়াও ব্যবসার বিনিয়োগের জন্য সঞ্চয়ের উপর চাপ পড়তে পারে, তাই কাজ এবং ব্যবসা উভয়ের ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হলেও তা সঠিকভাবে কন্ট্রোল করতে হবে। 

প্রত্যেক ব্যবসায় ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ থাকে আর সেগুলোকে ওভারটেক করে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে কঠোর পরিশ্রম করা অপরিহার্য। পরিশ্রম এবং মেধা দুটোই একজন উদ্যোক্তার প্রয়োজন তাই সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া খুব জরুরী। তাই চাকরির পাশাপাশি কি ধরনের ব্যবসা করা যায় তা ভেবে নিয়ে ব্যবসা শুরু করা উচিত। 

সফল উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে ব্যবসা শুরু

একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে অবশ্যই একজন সফল উদ্যোক্তার অভিজ্ঞতার বিষয় জেনে থাকা খুব জরুরী। তাই একজন ইঞ্জিনিয়ার রাতে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে ধীরে ধীরে পুণ্য কালীন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকে এবং একজন শিক্ষক ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি ইউটিউবে শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করে আর্থিকভাবে সফল হতে পারে। আর তাদের সকল অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় ছোট প্রশ্ন শুরু করলেও ধৈর্য ও সঠিক পরিকল্পনা থাকলে বড় সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। 

চাকরির পাশাপাশি ব্যবস্থা করা আসলেই সম্ভব, তবে এটি নির্ভর করে আপনার পরিকল্পনা সময় ব্যবস্থাপনা এবং ইচ্ছা শক্তির ওপর। যে ব্যবসা শুরু করুন না কেন সেটি যেন আপনার আগ্রহ ও দক্ষতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। একটি ছোট শুরুই ভবিষ্যতের বড় সফলতার ভিত্তি হতে পারে। তাই পরিকল্পনা করে, সঠিক সময়ে এবং ধৈর্য ধরে শুরু করুন আপনার নিজের ব্যবসা। 

ব্যবসার জন্য সঠিক পরিকল্পনা করা

ব্যবসার জন্য সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করাই হলো ব্যবসার প্রথম ধাপ। এটি এমন একটি নকশা, যা আপনার ব্যবসার ভবিষ্যৎ পথ নির্দেশ করবে। ব্যবসার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে প্রথমে ঠিক করতে হবে কেন আপনি এই ব্যবসা শুরু করবেন। এটি হতে পারে বাড়তি আয়ের জন্য বা সব পূরণের জন্য অথবা একটি বড় উদ্যোগের সূচনা করা। আপনি যে পণ্য বা পরিষেবা নিয়ে কাজ করতে চান তার বাজারে চাহিদা আছে কিনা তা যাচাই করে ব্যবসা শুরু করা। 




তাছাড়াও প্রতিযোগিতা বিশেষ করে আপনার বাজারের প্রতিযোগিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। বাজারে কিভাবে তাদের পণ্য বা পরিষেবা সরবরাহ করে এবং তাদের মূল শক্তি এবং দুটো তাকে তা আপনাকে ভালো জানতে হবে। আপনি ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য কি ধরনের মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করতে পারেন তা হলো যেমন-সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, লোকাল বিজ্ঞাপন বা মুখে মুখে প্রচার, এবং ইমেইল মার্কেটিং বা ব্লগিং এর মাধ্যমে ব্যবসার পরিচিতি বিস্তার করা। 

ব্যবসার জন্য পুঁজির উৎস

কোন ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রথমে মূলধনের প্রয়োজন। এটি বড় বা ছোট যাই হোক না কেন আপনি বিভিন্ন উৎস থেকে পুঁজি জোগাড় করতে পারেন। ব্যবসার জন্য নিজের সঞ্চয় ব্যবহার করা সবচেয়ে সহজ এবং নিরাপদ উপায়। তবে এখানে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার দৈনন্দিন খরচ যেন প্রভাবিত না হয়। এছাড়াও আপনার আত্মীয় স্বজন বা বন্ধুদের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। তবে এই অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত এবং প্রত্যাশা গুলো পরিষ্কার হওয়া উচিত। 


ব্যাংক থেকেও ছোট ব্যবসার জন্য লোন নেওয়া একটি ভালো বিকল্প। অনেক সময় সরকারও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা সহ লোন প্রদান করে থাকে। তাছাড়াও আপনি চাইলে একজন ব্যবসায়ীক অংশীদার খুঁজে নিতে পারেন, যিনি মূলধন বিনিয়োগে সাহায্য করবে। তবে এই ক্ষেত্রে লাভ এবং দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাই চাকরির পাশাপাশি কি ব্যবসা শুরু করা যায় তা সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনই ব্যবস্থা শুরু করুন। 

ব্যবসা পরিচালনা করার টুলস ও কৌশল

বর্তমানে প্রযুক্তি ব্যবসা পরিচালনাকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। বই পত্র ও হিসাব রাখার সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ব্যবসার আয়-ব্যয় এবং লেনদেনের হিসাব রাখা অত্যন্ত সহজ। যোগাযোগের ব্যবস্থার জন্য টুলস গ্রাহকদের সঙ্গে ভ্যাকচুয়াল মিটিং করার জন্য জুম বা গুগল মিট খুব ভালো মাধ্যম। whatsapp বিজনেস কাস্টমার সাপোর্ট এবং অর্ডার ব্যবস্থাপনার জন্য খুব ভালো কার্যকরী।

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলস যা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট এবং বিজ্ঞাপনের জন্য গ্রাফিক্স তৈরি করে আপনার ব্যবসার পরিধি আরো বাড়াতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের পোস্ট সিডিউল করার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারবেন। তাছাড়া টাইম ম্যানেজমেন্ট টুলস এর মাধ্যমে কাজের পরিকল্পনা এবং অগ্রগতি ত্যাগ করা যায়। যা আপনার ব্যবসার একটি নির্দিষ্ট সমচরি তৈরি এবং মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি টুলস। 

ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা

প্রত্যেক সফল উদ্যোক্তা গল্পে ব্যর্থতা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বেথুয়া থেকে শেখার মানসিকতা গড়ে তোলাই আপনাকে আরো বড় করে তুলতে পারে। যদি ব্যবসায় সফলতা না আসে, তবে প্রথমেই ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। কি কি ভুল হয়েছে তার সময় মত ব্যবস্থা নিয়ে যথাযথ সময়ে অন্য ও পরিষেবার মান ঠিক রেখে গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। 

আপনার ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে প্রয়োজন হলে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করুন এবং সেটি বাস্তবায়নে মনোযোগ দিন। ব্যর্থতা আপনার মনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখা এবং নতুন করে শুরু করার সাহস থাকা জরুরি। তাই চাকরির পাশাপাশি কি ব্যবসা করা যায় তা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করা উচিত। 

নারীদের জন্য ব্যবসার সুযোগ করা

বাংলাদেশ নারীদের জন্য ঘরে বসে শুরু করার মত অনেক সম্ভাবনার ব্যবসা আছে যেমন-হোম ক্যাটারিং, বিউটি এবং স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট, টিউটরিং করা ইত্যাদি। বাসায় তৈরি খাবার সরবরাহ করে আর্থিক ভাবে সফল হওয়া সম্ভব, তাছাড়া হাতের তৈরি সাবান এবং স্কিন কেয়ার সামগ্রী বিক্রি করে বা ছোটদের পড়াশোনার পাশাপাশি শিল্পকলা ও সংগীত শিখিয়ে আর্থিক উপার্জন করা সম্ভব। সঠিক পরিকল্পনা এবং সময় মত ব্যবস্থা ও ফ্যাশন থাকলে নারীরা চাকরির পাশাপাশি একটি ব্যবসা সফলভাবে তার কড়াতে পারেন।

ব্যবসার ধর্ম অনুযায়ী পুজির পরিমাণ নির্ভর করে। অনলাইন ব্যবসার জন্য খুব অল্প পুজিতে শুরু করা সম্ভব, কিন্তু পণ্যের ব্যবসা করলে বেশি পুঁজি লাগতে পারে। তাই আপনারা দৈনিক রুটিন বিশেষণ করুন এবং অবসর সময়ে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসার জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুন। যা ছোট পরিষদ থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে ব্যবসা বড় করে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠুন।

শেষ কথা: চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা নিয়ে 

চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার ধারণা শুধুমাত্র বাড়তি আয়ই নয়, এটি আপনাকে একটি নতুন পরিচিতি দেবে এবং আপনার দক্ষতাকে আরও প্রসারিত করবে। তবে এটি একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ, যা আপনাকে সময়মতো ধৈর্য এবং কৌশলগত পরিকল্পনার সমন্বয় করে আপনি সফল হতে পারবেন।

আপনার যদি ইচ্ছা শক্তি এবং সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, তবে ছোট শুরু থেকেই বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব। তাই আপনি যেই ব্যবসায়ী শুরু করুন না কেন, সেটি যেন আপনার স্বপ্ন পূরণে একটি ধাপ হয়ে দাঁড়ায়। আপনার ভবিষ্যতের উদ্যোগের জন্য শুভকামনা।






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন