পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়

অনেক চেষ্টা করেও পেটে চর্বি ঝড়াতে পারছেন না, তাহলে বেশ কিছু কৌশল জেনে নি ন যা হুহু করে আপনার পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে। পেটের চর্বি বাড়ার পেছনে থাকে একাধিক কারণ। তার মধ্যে অন্যতম হলো জীবন যাত্রায় যথেচ্ছাচার, হরমোনের সমস্যা এবং মদ্যপান। 

পেট ফুলে যাওয়ার অর্থ হল, লিভার ও প্ল্যান কিয়াস সহ পেটের গহবর ের প্রধান অঙ্গগুলিতে অতিরিক্ত চর্বি জমা। তাই অতিরিক্ত পেটের চর্বি কমানোর ৯ নয়টি সহজ উপায় নিম্নে আলোচনা করা হলো। যা আপনার পেটে চর্বি কমাতে অনেক কাজে আসবে। 

পেজ সূচিপত্র: পেটের চর্বি কমাতে প্রচুর ফাইবার খান


পেটের চর্বি কমাতে প্রচুর ফাইবার খান

পেটের চর্বি কমাতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া পেটে চর্বি কমানোর অন্যতম প্রাকৃতিক উপায়। ফাইবার যেমন তৃপ্তি দিতে পারে, তেমনি আবার একজনের পেটে ও দ্রুত ভাড়ায়। ফাইবার অল্প খেলেই যেহেতু পেট ভরে যায়, তাই সে কারণে খাবারের পরিমাণও কম লাগে। হলে ক্যালরির পরিমাণও কমতে সাহায্য করবে। 

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ধীরে ধীরে ভেঙে যায় এবং হঠাৎ সুগার বাড়ার সম্ভাবনা কমায়। ফাইবারের কিছু উচ্ছের মধ্যে রয়েছে আপেল, সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য, এবং বালির মতো একাধিক উপাদান। তাই পেটের চর্বি কমাতে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় এসব খাবার রাখতে পারেন। 

অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন

অতি প্রক্রিয়া জাত জাঙ্ক ফুড আসলেই রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট এবং লুকানো শর্করা ভরপুর। এসব খাদ্যগুলোতে অতিরিক্ত ক্যালোরি থাকে এবং আপনার শরীরে চর্বি জমা শুরু হয়। এইসব অতিরিক্ত চর্বি জমে থাকা এড়াতে চিনি যুক্ত পানীয়,ভাজাভুজি খাবার ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে।


আপনি কি খাচ্ছেন,সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে। সচেতন থাকলে শুধু পেটের চর্বি নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও ভালো থাকবে। তাই প্রতিদিন জাঙ্ক ফুড বাদ দিয়ে।ফলমূলের মধ্যে আপেল,কমলা,পেয়ারা, পেঁপে এসব আপনি আপনার দৈনন্দিন খাবারের তালিকার মধ্যে রাখতে পারেন।

ট্রান্স ফ্যাট পেটের চর্বি কমাতে এড়িয়ে চলুন

ট্রান্স-ফ্যাট হল অসম্পৃক্ত চর্বির একটি রূপ, যা অত্যন্ত ক্ষতিকরক এবং স্থূলতা সহ একাধিক কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার দিকে পরিচালিত করে। এই ট্রান্সফ্যাট আসলে প্রদাহ,ইনসুলিন প্রতিরোধ এবং পেটের চর্বি বৃদ্ধি করে। তাই ট্রান্স ফ্যাট প্রযুক্তিগতভাবে পরিমাণযোগ্য চর্বি নয়। তাই প্যাকেট জাত খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।সেটি ট্রান্স ফ্যাট যুক্তই খাবার থাকে।

যদিও রেডমি এবং দুগ্ধ জাত দ্রব্যগুলিতে কিছু পরিমাণে প্রাকৃতিক ট্রান্স ফ্যাট ওথাকে। তবে এটি মূলত হাইড্রোজেনেটেড উদ্ভিদ তেল পাওয়া কৃত্রিম ট্রান্স ফ্যাট, যা স্বাস্থ্যের অধিক সমস্যা সৃষ্টি করে। উৎপাদন খরচ কম এবং অনেকদিন টেকসই হয় বলে বেশিরভাগ প্যাকেট জাত ভাজা খাবার ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ তেল দিয়ে তৈরি হয়।

পেটের চর্বি কমাতে হাই প্রোটিন ডায়েট

হাই প্রোটিন ডায়েট প্রোটিন বিপাকীয় হার বাড়ায় এবং পেশির ভর ধরে রাখতে সাহায্য করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে পেট ভর্তি থাকে এবং এবং ঘন ঘন খোদা ভাব কাটায়, হাই প্রোটিন ডায়েট যেহেতু পেট ভর্তি রাখে,তার ফলে ক্যালরি খরচ কমে যায়। তাতে আখেরে পেটের চর্বি ও কমতে শুরু হয়।

ডায়েট প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করা আপনাকে অসুস্থ কর চর্বিযুক্ত খাবারের মতো অবাঞ্ছিত খাবার খাওয়ার পরিমাণও কমাতে সাহায্য করবে। প্রোটিনের বেশ কিছু উৎস হল মুরগি,মাছ,ডিম,পনির তোফু, মাশরুম এবং লেবু ইত্যাদি। তাই পেটে চর্বি কমাতে হাই প্রোটিন ডায়েট অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপায়। 

বেশি করে গোটা শস্য খান চর্বি কমাতে

পেটে চর্বি কমাতে অতিরিক্ত পরিমাণে রিফাইন বা পরিশোধিত কার্বোহাইডেট খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এবং তা হাই ব্লাড সুগারের কারণে হতে পারে। ময়দা, সাদা চাল, সুজি ইত্যাদিতে এ ধরনের কার্বোহাইডেট পাওয়া যায়। সুমিতা বিশ্বাস বলেছেন, এগুলোকে একেবারেই খাওয়া চলবে না। বরং, তারপরে গোটা গমের আটা, ব্রাউন রাইস বা বাদামি চাল, লাল চাল, ভাঙ্গা গম ইত্যাদি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। 

তিনি আরো বলেন এটি বিপাকে এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া প্রতিনিয়ত ব্যায়াম এবং নিয়মিত গোটা শস্য জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলে পেটে চর্বি কমানো সম্ভব। তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় গোটা শস্য জাতীয় খাদ্য রাখতে পারেন, যা আপনার পেটের চর্বি কমাতে অনেক সহায়তা করবে। 

অ্যালকোহল খুব অল্প পেটের চর্বি কমাতে

অ্যালকোহলে ক্যালরি বেশি থাকে এবং পেটে চর্বি বাড়ায়। শুধু ভুড়ি বাড়ায় নয়, সেসঙ্গে আবার অ্যালকোহল সে বলে শরীরের অন্যান্য ঝুঁকির দিকেও পরিচালিত করে। অ্যালকোহল হলো অতিরিক্ত ক্যালরি এবং এই অতিরিক্ত ক্যালোরি গুলি কে যদি কমাতে পারেন, তাহলে পেটে চর্বি ধরে যেতে পারে। 


তাই পেটে চর্বি কমাতে অ্যালকোহল যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এছাড়াও প্রতিনিয়ত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্য সেবনে মাধ্যমে নিজের শরীরকে সুস্থ রাখুন। অ্যালকোল জাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই অ্যালকোহল যুক্ত খাবার আমাদের সকলকে এড়িয়ে চলা উচিত। 

পেটের চর্বি কমাতে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ 

পেটের চর্বি কমাতে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে একটা পোষন বা একটা অংশ যদি সারাদিনের খাবারের রুটিন থেকে ছেটে ফেলতে পারেন, তাহলে দ্রুত পেটের চর্বি কমাতে পারবেন। প্রতিদিন অল্প অল্প করে খেতে হবে এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রোট সহ ক্যালোরি সমৃদ্ধ প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারে বন্ধ করতে হবে। 

অতিরিক্ত খাবারের একটা অংশ নিয়ন্ত্রণ অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ কমাতে বিশেষ অবদান রাখে। যা আমাদের পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই পেটে চর্বি কমাতে প্রতিনিয়ত ব্যায়াম এবং সুষম খাদ্য অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে আমরা পেটের চর্বি কমাতে পারবো। পেটে চর্বি কমাতে অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে। 

ভালো লাইফস্টাইল এবং প্রতিনিয়তই ব্যায়াম করা 

একটি সঠিক এবং সক্রিয় জীবনধারা পেটের চর্বি কমাতে প্রাকৃতিক উপায় গুলির মধ্যে অন্যতম। অতিরিক্ত ক্যালরি পান করার জন্য ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে যেখান সেখান থেকে ডায়েট চাট দেখে তা মেনে চললেই হবে না। চর্বি কমানোর মূল ধারণা হলো, খাদ্য তালিকার ক্যালরি/শক্তি গ্রহণ এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপ।

প্রধানত গ্রামের মাধ্যমে শক্তি ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করে, তাই আমাদের প্রতিনিয়তই ব্যায়াম এবং ভালো লাইফস্টাইল এর মাধ্যমে চলাফেরা করতে হবে। তাহলে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব হবে। তাই প্রতি নিয়ত ব্যায়াম করা আমাদের প্রত্যেকের প্রতি জরুরী।

ক্যালরি গ্রহণ এবং ক্যালরি ব্রায় ট্রাক করা 

পেটে চর্বি কমাতে খাবারের একটা অংশ নিয়ন্ত্রণের জন্য বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার এড়াতে ট্র্যাকিং অত্যন্ত জরুরি একটি কৌশল। এটি অবশ্যই আপনাকে আপনার ব্যায়াম এবং গাইডের প্যাটার্ন গুলিকে অত্যন্ত কার্যকর ভাবে সংশোধন করতে সাহায্য করে। আপনি কি খাচ্ছেন তা ট্যাগ করে, আপনি কখন বেশি বা কম খেয়েছেন তার পরিমাপ করতে পারেন এবং খাবারের ক্যালরির কাউন্ট করতে পারেন। 
ট্রাক করলেই আপনি একটা প্রবণতা ধরতে পারবেন। খেয়াল করে দেখবেন, কোন সপ্তাহে আপনি সবথেকে বেশি পরিমাণে ক্যালরি খাচ্ছেন। ব্যায়ামের মাধ্যমে ক্যালোরি বান করতে পাচ্ছেন কিনা, তাও ট্রাক করতে পারেন। ট্রাকিং সেই সব লোকেদের জন্যই কাজে আসে, যাদের খাওয়া দাওয়ার উপরে কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। পায় পেটে চর্বি কমাতে প্রতিনিয়ত ব্যায়াম এবং খাবার পরিমাণ কন্ট্রোল রাখতে পারলে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।

লেখকের শেষ কথা

পেটের চর্বি এবং এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব বোঝা হল কার্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণের দিকে প্রথম পদক্ষেপ। এই টিপসগুলিকে আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে-সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যাপ্ত ঘুম আপনি পেটে চর্বি কমাতে এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারেন।

তাই আমার এই আর্টিকেলটি যদি পড়ে আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কাছে শেয়ার করে দিন। এতক্ষণ পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন