খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা
  শীতের মৌসুম মানে খেজুরের গুড় এই গুড় নিজস্ব গন্ধ ও সাধের জন্য সবার পছন্দের।
  শীতের পিঠা পায়েস এ বেশিরভাগ তৈরিতে ব্যবহার হয় খেজুরের গুড়। খেজুরের গুড়
  খেতে সুস্বাদু বলে এটি বেশি খাওয়া হয়। তাছাড়া এর গুড়ের উপকারিতার কথা আমাদের
  বেশিরভাগেরই অজানা। 
খেজুরের গুড় আমাদের ঐতিহ্যবাহী এবং প্রিয় একটি খাদ্য উপাদান। এটি পুষ্টিকর এবং
  প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিভাবে
  খাঁটি খেজুরের উপর চেনা যায় এবং এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্র: খাঁটি খেজুরের গুড় চেনার উপায়
খাঁটি খেজুরের গুড় চেনার উপায়
  খাঁটি খেজুরের গুড় সাধারণত গারো বাদামী রঙের হয়। অতিরিক্ত উজ্জ্বল বা হলুদাভ
  গুড় হলে তার রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হতে পারে। খাঁটি খেজুরের গুড়ে প্রাকৃতিক
  মিষ্টি তাঁর সঙ্গে একটি হালকা গন্ধ থাকে। রাসায়নিক বা চিনি গুড় বেশি মিষ্টি এবং
  প্রাকৃতিক খেজুরের গুড়ের স্বাদ থেকে ভিন্ন। খাঁটি গুঁড়ে খেজুরের স্বাভাবিক গন্ধ
  পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন:সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
  তাছাড়া রাসায়নিক মেশানো গুড়ে কৃত্তিম বা তীব্র গন্ধ থাকতে পারে। খাঁটি খেজুরের
  গুড় সাধারণত নরম এবং ভঙ্গুর হয়। খুব শক্ত বা চটচটে গুড় হলে তা ভেজাল হতে পারে
  । এক চামচ গুড় পানি দিয়ে মেশালে যদি তা পুরোপুরি দ্রবীভূত হয়ে যায় তবে তা
  খাঁটি,আর ভেজাল গুড় সাধারণত দ্রবীভূত হয় না নিচে তলানি পড়ে।
খেজুরের গুড়ের উপকারিতা
  খেজুরের গুড় একটি প্রাকৃতিক মিষ্টি যা খেজুরের রস থেকে তৈরি হয় এবং এটি অনেক
  ধরনের উপকারিতা প্রদান করে। খেজুরের গুড় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং
  প্রাকৃতিক সুগার ধারণ করে, যা শরীরের দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে তাই শরীর ক্লান্ত
  থাকলে খেজুরের গুড় খাবো উপকারী। এছাড়াও খেজুরের গুড় ফাইবারের সমৃদ্ধ যা পেট
  পরিষ্কার রাখতে এবং হজম ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। খেজুরের গুড় আয়রনের
  ভালো উৎস এটি রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের
  পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। খেজুরের গুড় শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে
  সাহায্য করে এটি রক্ত পরিষ্কার করতে এবং লিভারের কার্যকারিতা ভিত্তি করতে সাহায্য
  করে। খেজুরের গুড় পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর ভালো উৎস যা হৃদপিন্ডের
  স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। 
  খেজুরের গুড়ে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ
  ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। তাছাড়াও খেজুরের গুড়ের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন
  ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এটি ত্বকের জেল্লা এনে দেয় এবং ত্বকের প্রাকৃতিক
  উজ্জ্বলতা বাড়ায়। কিরে ভোট একটি প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে
  চিন্তা করা যেতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি মিষ্টি খেতে চান তবে। তবে অতিরিক্ত
  পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো কারো নিতে প্রচুর ক্যালরি ও সুগার পরিমাণ
  অনেক থাকে।
খেজুরের গুড় তৈরির প্রক্রিয়া
  খেজুরের গুড় তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যত্ন এবং দক্ষতার সঙ্গে করা হয়।
  প্রথমে খেজুরের গাছের উপরে অংশ কাটা হয়। তারপর সেখানে থেকে প্রাকৃতিক রস সংগ্রহ
  করা হয় এবং এ রস সাধারণত খুব ভরে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এরপর খেজুরের রস ছেকে সব
  ধরনের ময়লা দূর করা হয়। 
  তারপর ছেকে নেওয়া রস একটি বড় পাত্রে ঢেলে জাল দেওয়া হয় এবং এটি ধীরে ধীরে ঘন
  হতে শুরু হয়। এটি ঘন হয়ে এলে সেটি একটি নির্দিষ্ট অবস্থায় আনা হয় এবং ঠান্ডা
  করা হয়। ঠান্ডা হওয়ার পর এটি গুড়ের আকারে তৈরি হয়। তৈরি হও গুণ নির্দিষ্ট
  আকৃতিতে কেটে তা ঢেলে প্যাকেট করা হয়।
খেজুরের গুড় ব্যবহারের বিভিন্ন উপায়
  খেজুরের গুড় পিঠা, পায়েস বা বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারের ব্যবহার করা হয়ে
  থাকে। এটি সরাসরি খাওয়া যায় যা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এছাড়া গরম পানিতে বা দুধে
  মিশিয়ে খেজুরের গুড় পানিও হিসেবে উপভোগ করা যায়।
  চায়ের বিকল্প হিসেবে খেজুরের গুড়ের ব্যবহার একটি সাধারণ পদ্ধতি। এছাড়াও রুটি
  বা বিভিন্ন পিঠা, পায়েস বা অন্যান্য বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরির জন্য
  খেজুরের গুড় ব্যবহার করে থাকে।
খেজুরের গুড় আয়রনের ঘাটতি মেটায়
  আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে। এর ফলে নানা ধরনের
  অসুখে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। আপনি জেনে অবাক হবেন যে খেজুরের গুড়ে রয়েছে
  প্রচুর আয়রন। তাই খেজুরের গুড় খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়। ফলে দূরে
  থাকে রক্তশূন্যতা সহ আয়রনের ঘাটতি জনিত যাবতীয় অসুখ। নারী এবং পুরুষের শরীরের
  গঠন এক নয়, কারণ নারীদের জন্য এমন কিছু পুষ্টির দরকার পড়ে যা সব ধরনের খাবারে
  থাকে না। এক্ষেত্রে একটি উপকারী খাবার হতে পারে খেজুরের গুড়।
আরো পড়ুন:সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
  এতে থাকা নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান নারীদের বিভিন্ন অসুখ থেকে দূরে রাখে। এছাড়াও
  আপনি যদি মুসলিম ত্বক চান তবে নিয়মিত খেজুরের গুড় খাবেন, এতে চেহারায় সহজে বসে
  ছাপ পড়বে না। ব্রণ ও ফুস্কুড়ির দূর করতে খেজুরের গুড় অত্যন্ত কার্যকরী। তক
  সুন্দর থাকুক কেনা চাই তাহলে এবার প্রতিদিন খাবারের যোগ করুন খেজুরের গুড়।
খেজুরের গুড় হজমের সমস্যা দূর করে
  যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন অল্প করে খেজুরের গুড় খেলে এই সমস্যা
  থেকে মুক্তি পাবেন। যারা নিয়মিত খেজুরের গুড় খান, তারা এর সুফল পাচ্ছেন। খেজুর
  গুড় আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য ,আমাশা ,বদহজমের মতো অসুখ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য
  করবে। এছাড়াও খেজুরের গুড় লিভার ভালো রাখে খেজুরের গুড়ে থাকে প্রচুর সোডিয়াম
  ও পটাশিয়াম।
  এই দুই উপকারী উপাদান আমাদের পেশিকে শক্তিশালী করতে কাজ করে। নিয়মিত খেজুরের
  গুড় খেলে তা মেদ ঝরাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতেও কাজ করে। তাছাড়াও খেজুরের
  গুড় সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ রাখে উচ্চ রক্তচাপ। যাদের ডায়বেটিস আছে তারা খেজুর
  পরিমিত পরিমাণে খেতে পারে তাছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।
লেখকের শেষ মন্তব্য
  খেজুরের গুড়ি প্রাকৃতিক এবং পুষ্টিকর খাদ্য, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত
  উপকারী। এটি খাঁটি কিনা নিশ্চিত করে কেনা উচিত এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে সংরক্ষণ
  করা উচিত। হাতি খেজুরের গুড়ের উপকারিতা পেতে এটি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় যোগ
  করুন। 
  আর আজকে আমার এই আর্টিকেলটি যদি পড়ে আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার
  বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের কাছে শেয়ার করে দিন। এছাড়াও আমার এই
  ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পরার জন্য আপনাকে
  অসংখ্য ধন্যবাদ।
