দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায় নিয়ে কিছু তথ্য নিয়ে আলোচনা করা
হলো।গ্যাসের সমস্যা বাংলাদেশের একটি জাতীয় সমস্যা। আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবন
যাত্রা এর জন্য অনেকটা দায়ী।
আমরা যদি জানি যে কোন কোন খাবার খেলে গ্যাস সৃষ্টি হয়, গ্যাস থেকে আমরা কিভাবে
মুক্তি পেতে পারি এবং গ্যাস প্রতিরোধে আমাদের করণীয় কি হবে তবে সহজেই গ্যাসের
সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারি।
পেজ সূচিপত্র: অতিরিক্ত গ্যাসের কারণসমূহ
- অতিরিক্ত গ্যাসের কারণসমূহ
- আদা দ্রুত পেটের গ্যাস কমায়
- জিরার মাধ্যমে পেটের গ্যাস কমানো সম্ভব
- অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারের মাধ্যমে
- পুদিনা পাতা খাওয়ার মাধ্যমে
- মৌরী খাওয়ার মাধ্যমে
- পেটের গ্যাসে কমায় ব্রেকিং সোডা
- পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে
- ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া
- হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়াম
- কোন খাবার গ্যাস বাড়ায় তা চিহ্নিত করা
- লেখকের শেষ মন্তব্য
অতিরিক্ত গ্যাসের কারণসমূহ
প্রায়শয় দেখা যায় আপনি যা খাচ্ছেন তার ফলে আপনার গ্যাস তৈরি হচ্ছে। খাবারগুলি
প্রথমে আপনার ক্ষুদ্র অন্ত্রের মধ্যে হজম হয়। আর অবশিষ্ট যেগুলি হজম হয়নি তা
আপনার দেহের কোলনের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং ইস্টের সাথে ফেমেন্টেড বা
গাজান হয়।
আরো পড়ুন:পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়
এই প্রক্রিয়ার মিথেন এবং হাইড্রোজেন উৎপাদন হয়, যা ফ্ল্যাটাস বা গ্যাস হিসেবে
বের হয়ে যায়। বেশিরভাগ লোকের আয় তাদের আধ্যাবস পরিবর্তন করতে পারলে গ্যাস
সম্পর্কিত উৎসর্গগুলো হ্রাস করতে পারে। এজন্য কোন খাবারগুলি আপনাকে গ্যাসের
পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে তা একটি খাবার গাড়িতে লিখে রাখা শ্রেয়।
আদা দ্রুত পেটের গ্যাস কমায়
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায় মধ্যে আদা অত্যন্ত কার্যকরী। আদা হজম
প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে খুবই কার্যকরী। এতে জিজ্ঞারল নামক প্রধান রয়েছে, যা
হজমে সহায় ক এনজাইম তৈরি করে এবং পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
এক কাপ গরম পানিতে কয়েক টুকরা আধার কুচি দিয়ে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ছেকে
নিয়ে হালকা গরম অবস্থায় পান করুন। দিনে ২-৩ বার এই পানীয় পান করতে পারেন।
চাইলে খাওয়ার আগে এক টুকরা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন।
জিরার মাধ্যমে পেটের গ্যাস কমানো সম্ভব
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায় মধ্যে জিরা অত্যন্ত কার্যকরী। জিরা
পেটের গ্যাস, ফোলা ভাব এবং বদহজম কমাতে অত্যন্ত উপকারী। এটি
গ্যাস্ট্রোইনটেষ্টাইনালট্রাক্টৈ গ্যাস জমা হওয়া রোধ করে।
এক চা চামচ চিড়া হালকা ভেজে গুড়া করে নিন। এক গ্লাস গরম পানিতে মিশেয়ে খাবারের
পর পান করুন। অথবা এক এক চা চামচ চিড়া এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে ছেকে নিয়ে চায়ের
মত পান করতে পারে।
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারের মাধ্যমে
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এবং পেটে অ্যাসিডের
মাত্রা ভারসাম্য রাখে, যা গ্যাস কমাতে সহায়ক। তাই দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর জন্য
ঘরোয়া ওপারে মধ্যে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুন:১০০ লেয়ার মুরগি পালন লাভ লস
এক গ্লাস উষ্ণ পানিতে এক টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। খাবার
২০-৩০ মিনিট আগে এটি পান করুন।
পুদিনা পাতা খাওয়ার মাধ্যমে
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপার মধ্যে পুদিনা পাতা অন্যতম। পুদিনা পাতার
শক্তি দায়ক গুণাবলী হজমতন্ত্রের পেশিগুলোকে শিথিল করে এবং গ্যাস সহজে বেরিয়ে
যেতে সাহায্য করে।
পুদিনা পাতার ব্যবহারের নিয়ম হলো, কিছু পুদিনা পাতা গরম পানিতে দিয়ে চা তৈরি
করে পান করুন। এছাড়াও সরাসরি কয়েকটি পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেলেও উপকার
পাবেন।
মৌরী খাওয়ার মাধ্যমে
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে মৌরি অত্যন্ত কার্যকরী। মৌরি বিচ
হজম প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে এবং পেটের ফোলা ভাব ও গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
এতে এ্যানি থোল নামক যৌগ থাকে, যা হজমতন্ত্রের খিচুনি কমায়।
খাবারের পর এক চা চামচ মৌরি বীজ চিবিয়ে খেতে পারেন। অথবা মৌরি চা বানিয়েও পান
করতে পারেন। এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ মৌরি দিয়ে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে ছেকে
নিন এবং তারপর পান করুন।
পেটের গ্যাসে কমায় ব্রেকিং সোডা
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে ব্রেকিং সোডা ও অত্যন্ত কার্যকরী।
ব্রেকিং সোডা এক্টিভ প্রাকৃতিক এন্টাসিড হিসেবে কাজ করে। তাছাড়াও পেটের অতিরিক্ত
অ্যাসিডকে নিরপেক্ষ করে দ্রুত গ্যাস থেকে মুক্তি দিতে পারে।
এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ ব্রকিং সোডা মিশিয়ে পান করুন। তবে নিয়মিত বা
অতিরিক্ত ব্যবহার করা উচিত না। অতিরিক্ত বেকিং সোডা ব্যবহারের ফলে শারীরিক অনেক
সমস্যা হতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরী।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা হজম প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, যা গ্যাস তৈরীর অন্যতম কারণ। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত
পরিমান পানি পান করা অত্যন্ত জরুরী।
পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে দ্রুত পেটের গ্যাস কমানো সম্ভব। তাই নিয়মিত
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা জরুরী। প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস পানি পান করা
প্রত্যেকটি মানুষের দরকার। আর এই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার মাধ্যমে দ্রুত
পেটের গ্যাস কমানো সম্ভব।
ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া অত্যন্ত
জরুরী। তাড়াহুড়া করে খাবার খেলে বাতাস বেশি পরিমাণে পেটে প্রবেশ করে, যা গ্যাস
সৃষ্টির কারণ হয়। তাই ধীরে ধীরে এবং ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।
তাড়াহড়ো করে খাবার খেলে খাবার হজমতে সমস্যা হয় যা পেটের গ্যাস সৃষ্টি করে
থাকে। তাই দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর জন্য ধীরে ধীরে এবং ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার
গ্রহণ করা প্রত্যেকটি মানুষের জন্য জরুরী।
হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়াম
দ্রুত পেটের ক্যাশ কামানোর ঘরোয়াবের মধ্যে হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়াম করা
অত্যন্ত জরুরী। খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হারাটি করলে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়
এবং গ্যাস কমে। তাছাড়াও নিয়মিত হালকা ব্যায়াম হজমন্ত্রকে সক্রিয় রাখে যা
পেটের গ্যাস কমাতে অত্যন্ত সহায়ক।
পেটের দ্রুত গ্যাস কমানোর জন্য খাওয়া-দাওয়ার করার পর হাটাহাটি করে বা সামান্য
কিছু ব্যায়াম করার মাধ্যমে পেটের গ্যাস কমানো সম্ভব। তাই খাওয়া দাওয়ার পর
প্রতিনিয়তই হাটাহাটি করা ও সামান্য ব্যায়াম করার মাধ্যমে দ্রুত পেটের গ্যাস
কমানো সম্ভব।
কোন খাবার গ্যাস বাড়ায় তা চিহ্নিত করা
পেটের দ্রুত গ্যাস বাড়ানোর জন্য কোন কোন খাবার দ্রুত গ্যাস বাড়ায় তা চিহ্নিত
করে খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। কিছু নির্দিষ্ট খাবার যেমন-সিম, বাঁধাকপি, ডাল,
অতিরিক্ত মিষ্টি বা ভাজাপোড়া খাবার মানুষের পেটে গ্যাস বাড়তে। আপনার কোন খাবারে
গ্যাস হয় তা চিহ্নিত করুন এবং সেগুলো পরিমিত পরিমাণে খান বা এড়িয়ে চলুন।
এছাড়া উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার যেমন বিভিন্ন ধরনের সবজি, ফলমূল, আস্ত শস্য দানা
আপনার পেটের গ্যাস উৎপাদনের কারণ। তাছাড়াও ধূমপান কিংবা তামার জীবাণুর কারণেও
অত্যাধিক গ্যাস দেহে জমা হতে পারে, ডাল জাত খাদ্য এবং বিভিন্ন প্রকার ডাল খাওয়ার
ফলেও গ্যাসের প্রভাব দেখা দেয়। তাই এ সমস্ত খাবার অল্প পরিমাণে খান বা এড়িয়ে
চলুন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
আমার এই আর্টিকেলটিতে দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করা হয়েছে। তাই আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে
আপনি আপনার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের কাছে শেয়ার করে দিন। তাছাড়াও আমার এই
ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অনেক
ধন্যবাদ।