মাথার সামনের চুল গজানোর উপায়
মাথার সামনের চুল গজানোর উপায় নিয়ে কিছু আলোচনা করা হলো। মাথার সামনের দিকে চুল
পাতলা হয়ে যাওয়া বা চুল পড়ে যাওয়া অনেকেরই সমস্যা। বিশেষ করে পুরুষদের
ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা হতে
পারে।
মাথার সামনের দিকে চুল কমে যাওয়া বা চুল পড়ে যাওয়া শুধু শারীরিক নয়, মানসিক
দিক থেকেও অনেকেই বিপর্যস্ত করে তোলে। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ কিছু সহজ উপায়
অবলম্বন করলে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
পেজ সূচিপত্র: নিয়মিত স্কাল্প মাসাজ করুন
নিয়মিত স্কাল্প মাসাজ করুন
প্রতিদিন নিয়মিত স্কাল্প ম্যাসাজ করুন ৫থেকে 10 মিনিট করে। মাথার চামড়ায় হালকা
করে ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং hari follicol- গুলো সক্রিয়
হবে। নিয়মিত স্কাল্প ম্যাসাজ করলে চুলের ঘনত্ব বাড়বে এবং চুলের গোড়া শক্ত ও
মজবুত হবে।
আরো পড়ুন:১০০ লেয়ার মুরগি পালন লাভ লস
মাথার চুল পড়া সমস্যায় প্রত্যেকে জর্জরিত। বিশেষ করে শীতকাল এলে তো কথাই নেই,
এসময় হেয়ার ফল বাড়ে কয়েক গুণ। দূষণ-অযত্নের কারণেও কারো কারো হেয়ার ফলে
সমস্যা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠে। যদি অল্প বয়সেই কারো অতিরিক্ত চুল ওঠে মাথার সামনে
তাক পরে যায় তাহলে তো তা নিয়ে মন খারাপ হয় স্বাভাবিক। তাই স্কাল্প ম্যাসাজ
করলে নতুন চুল গজাতে ম্যাজিকের মতোই কাজ করবে।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে চুল গজায়
মাথার চুল গজানোর জন্য যে সব পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার সেগুলো হল,বেশি বেশি
করে আয়রন,জিংক,ভিটামিন বি কমপ্লেক্স,ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। আমিষ-সবজি
জাতীয় খাবারগুলো ডিম,মাছ,চিকেন,দুধ,দই, পালং শাক বাদাম কুমড়ার বিচি
ইত্যাদি খাবার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
বিশেষ করে প্রোটিন ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া,স্ট্রেস কমানো,নিয়মিত ব্যায়াম
করা। এসব উপায় অবলম্বন করলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং নতুন চুল গজাতে
সাহায্য করে। তাই সকলকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।
মাথায় অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন
মাথায় এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে চুলের অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। মাথার
সামনের দিকে যদি চুল কমে যায়, তার পিছন যেমন জেনেটিক কারণ,হরমোনের
পরিবর্তন,স্টেস,অপুষ্টি,থাইরয়েড এই সমস্যাগুলো ইত্যাদি। যদি সঠিক সময়ে নিয়মিত
এলোভেরা জেল দিয়ে স্কাল্প ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং নতুন চুল গজাতে
সাহায্য করবে।
এলোভেরা জেল স্কাল্প ম্যাসাজ ওরে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে স্কাল্প
পরিষ্কার থাকবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এটি গবেষণায় দেখা গেছে
অ্যালোভেরা ব্যবহারে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
নারকেলের তেল ব্যবহার করুন
মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করুন প্রতি সপ্তাহের২/৩
বার।নারিকেল তেল গরম করে স্কাল্প ম্যাসাজ করুন। এতে চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং
নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। নারিকেল তেলের থাকা লরিক অ্যাসিড চুলের কন্ণ্ডিশনিং
করে এবং চুল পড়া কমায়। তাই চুল মজবুত ও শক্ত করার জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার
করি।
আরো পড়ুন:দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়
নারিকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা আপনার স্কেল্প
পোষ্টের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি আপনার চুলের ফ্রীজিভাব কাটিয়ে তুলে
জেলাও বাড়াবে তাড়াতাড়ি। নারিকেল তেল চুলের জন্য বেশ উপকারী ও চুল পড়া কমাতে
সাহায্য করে।
রোজমেরি অয়েল ব্যবহার করুন
মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য রোজমেরি অয়েল চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।
এটি স্কাল্প ম্যাসাজ করে ব্যবহার করতে পারেন এটি গবেষণায় দেখা গেছে রোজভ্যেরী
অয়েলminoxidil এর মতই কার্যকরী। নিয়মিত অনুসরণ করলে চুল গজানো ধীরে ধীরে ফলাফল
পাবেন।
এতে চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে রোজমেরি তেলে চুল
পড়া কমায়। যদি চুলের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে হয়। তাহলে চুল পড়লে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সুস্থ ও সৌন্দর চুলের জন্য রোজমেরী অয়েল ব্যবহার
করে চুলের যত্ন নেওয়া
পেঁয়াজের রস ব্যবহারের মাধ্যম
মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য পেঁয়াজের রস হচ্ছে একটি অন্যতম ব্যবহারের কার্যকরী
মাধ্যম। পেঁয়াজের রস স্কাল্প লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের
বৃদ্ধি পাবে পেয়াজে থাকা সালফার চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।পেঁয়াজের রস চুলে
লাগালে চুলের গোরা শক্ত ও মজবুত হয় এবং চুল দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য পেঁয়াজের রসের কার্যকারিতা অনেক থাকে। পেঁয়াজের রস
এবং লেবুর রস যদি একসাথে চুলে স্কাল্প ম্যাসাজ করা যায় তাহলে চুলে খুশকি দূর হয়
চুল ঘন ও সিল্কি হয়। তাই পেঁয়াজের রস মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য সকলেই চুলে
ম্যাসাজ করা দরকার।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে
শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়বে যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে প্রতিদিন অন্তত ৩০
মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত মেডিটেশন, যোগব্যায়াম করুন এতে স্ট্রেস কমবে এবং চুলের
স্বাস্থ্য ভালো থাকবে স্ট্রেস চুল পড়া একটি বড় কারণ।
মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য স্বাস্থ্যের পক্ষে ব্যায়াম অত্যন্ত একটি
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে সঠিক পদ্ধতিতে যত্ন নিলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
নিয়মিত ব্যায়াম করা আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বিশেষ করে প্রোটিন স্বাস্থ্যের
পক্ষে অত্যন্ত ভালো কাজ করে। এইসব উপায় অবলম্বন করলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে
এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এক মাসেই আপনার চুল হবে ঘন ও সুন্দর।
Biotin সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের মাধ্যমে
মাথার সামনে চুল গজানোর জন্য বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট নিন। বায়োটিন চুলের বৃদ্ধিতে
সাহায্য করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন তবে এতে
পাঁচশ পতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকুন যাতে করে চুলের গোরা মজবুত ও নতুন চুল
গজাচ্ছে কিনা সেই দিকে খেয়াল নিতে হবে।
বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট চুলের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। চুলের যত্ন নেওয়া একটি
ধারাবাহিক প্রক্রিয়া একদিনে ফলাফল পাওয়া যায় না তবে ধৈর্য ধরে নিয়মিত যত্ন
নিতে হবে একটু ভালো করে নজর দিলেই মাথার সামনের চুল গজানোর সমস্যার সমাধান পাওয়া
যেতে পারে। তাই আমরা চুল বৃদ্ধি করতে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট চুল মজবুত ঘন ও সুন্দর
করতে সাহায্য করে।
Minoxidil ব্যবহারের মাধ্যমে
মিনোক্সিডিল একটি FDA অনুমোদিত ওষুধ যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মাথার সামনে
চুল গজানোর জন্য মিনঅক্সিডেন্ট একটি অত্যন্ত কার্যকরী ওষুধ। তবে এটি ব্যবহারের
আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। চুল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অনিন্দ্র সেন বলেছেন,
চুলের যত্ন নেওয়া একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একদিনে ফলাফল পাওয়া যাবে
না।
ধৈর্য ধরে নিয়মিত যত্ন নিতে হবে, সাধারণত তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ফলাফল দেখা
যায়। তিনি আরো বলেন, চুলের সমস্যার দীর্ঘদিনের হলে বা খুব বেশি চুল পড়লে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে প্রায় ৫৮% পুরুষ
ত্রিশ বছর বয়সে আগে চুল পড়া বা টাক পড়ার সমস্যায় ভোগেন। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে
এই হার প্রায় ৪০%, তাই চুলের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরী।
লেখকের শেষ মন্তব্য
মাথার সামনের দিকে চুল পাতলা হয়ে যাওয়া বা চুল পড়ে যাওয়া অনেকেরই সমস্যা। তাই
আমার এই আর্টিকেলটিতে চুল গজানোর কিছু কার্যকরী উপাদান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়া আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধু বান্ধব
ও আত্মীয় স্বজনের কাছে শেয়ার করে দিন।
আমার এই ওয়েব সাইটে আরো অনেক আর্টিকেল লেখা আছে আপনারা যদি পড়তে চান তাহলে আমার
এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। আর আমার এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার জন্য
আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।