মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত ঘরোয়া উপায়

মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত ঘরোয়া উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। ত্বকেট উজ্জ্বলতা এবং সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয় ব্রণ। আমাদের ত্বক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এর আকৃতি বৃদ্ধি পায় তখন এর ভেতরে পুজ জমা হতে থাকে, যা ধীরে ধীরে ব্রণের আকার ধারণ করে। 

সাধারণত মেয়েরাই ব্রণ ও ব্রণের দাগ নিয়ে বেশি ভোগে। বাজারের দামি কসমেটিকের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি যা সহজেই আপনার ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে। আর ঘরোয়া প্রাকৃতিক ও অর্গানিক সামগ্রীই সবথেকে ভালো এবং নিরাপদ। আর এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ভয় থাকে না। 

পেজ সূচিপত্র: শসার রস, চালের গুড়া ও মধু ব্যবহার 


শসার রস, চালের গুড়া ও মধু ব্যবহার 

শসার রস তৈলাক তোতা দূর করতে খুবই কার্যকর। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শশুর রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন, কিংবা আইস কিউব করে রেখেও ব্যবহার করতে। শসার রস মুখের ব্রণ দ্রুত দূর করতে খুব কার্যকরী একটি জিনিস। এছাড়া স্কাব হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে এর সঙ্গে চালের গুড়া মিশিয়ে নিলেই হবে। 


এছাড়া যাদের মধুতে এলার্জি নেই তারা সামান্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন এই মিশ্রণ। সপ্তাহে দুইদিন এই প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার হবে খুব সুন্দরভাবে। ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস ডুর হয়ে যাবে খুব দ্রুত। এছাড়া আরো খেয়াল রাখতে হবে ব্রণ থাকলে স্কাব করা যাবে না।

কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো 

কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুড়া ব্রনের জন্য খুব কার্যকরী দুটি উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। মিশ্রণটি এরপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে গেলে মুখমন্ডল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র ব্রণ দূর করার কাজ করে না বরং ব্রণের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে। তাই দ্রুত ব্রণ দূর করতে কাঁচা হলুদ এবং চন্দ্র কাঠের গুড়া খুব কার্যকরী একটি জিনিস। কাঁচা হলুদ এবং চন্দর কাঠের গুড়া ব্যবহারের মাধ্যমে আপনারা অতি সহজেই ব্রণ এবং ব্রণের দাগ সহজেই দূর করতে পারবেন।

আপেল এবং মধুর মিশ্রণ 

ব্রণ দূর করতে আপেল এবং মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করা কার্যকরী কি জিনিস। আপেল এবং মধুর মিশন হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রথমে আপেলের পেস্ট তৈরি করে তাতে ৪-৬ ফোটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এরপর মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

এটি ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখে এবং ত্বকের রং ফর্সা করে। সপ্তাহে ৫-৬ বার আপেল এবং মধুর মিশ্রণটি ব্যবহার করা যেতে পারে। আপেল এবং মধুর মিশ্রণ টি ব্যবহারের ফলে আপনি কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ত্বকের পরিবর্তন অনুভব করতে পারবেন।


তুলসী পাতার রস ব্যবহারের মাধ্যমে 

তুলসী পাতার রস ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রণ দ্রুত দূর করা সম্ভব। ব্রণের জন্য তুলসী পাতার রস খুব উপকারী। কারণ তুলসী পাতায় আছে আয়ুর্বেদিক গুণ। শুধুমাত্র তুলসী পাতার রস ব্রণের আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে রেখে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। 


এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। আর এভাবেই প্রতিনিয়ত তুলসী পাতার রস ব্যবহারের মাধ্যমে মুখের ব্রণ দ্রুত দূর করা সম্ভব। আর এভাবে তুলসী পাতার রস প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে আপনি অতি সহজেই মুখের ব্রণ দূর করতে পারবেন।

দারুচিনির গুড়া ও গোলাপজল 

মুখের ব্রণ দূর করতে দারুচিনি গুড়া ও গোলাপ জল অত্যন্ত কার্যকরী। গোলাপ জলের নিয়মিত ব্যবহারে মুখের ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনির গুঁড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আর এই পেস্ট ব্রণের ওপর লাগিয়ে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন, এতে ব্রণের সংক্রমণ চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। 

আর গোলাপ জল অনেকের ত্বকের সাথে এডজাস্ট হয় না, তারা সেই ক্ষেত্রে গোলাপ জলের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এই মিশ্রণ আপনার বোনের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে, সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ব্যবহার করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

ডিমের সাদা অংশ ব্যবহারের মাধ্যমে 

মুখের ব্রণের জন্য ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্রণ দ্রুত দূর করা সম্ভব। ব্রণ হবার একটি অন্যতম কারণ হলো অপরিষ্কার ত্বক। তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। নিয়মিত স্ত্রাবিং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। রাতে শোয়ার আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় মেসেজ করে সারারাত রাখতে পারেন।

এটি আপনার ত্বকের খসখসে ভাব দূর করে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এর সাথে লেবুর রস যোগ করা যায়। আপনি এটি আধা ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলতে পারেন। আর এই ডিমের সাদা অংশ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি মুখের ব্রণ অতি দ্রুতই দূর করতে পারেন।

পেঁপে ও চালের গুঁড়ার মাধ্যমে 

পেঁপে ও চালের গুড়া ব্যবহারের মাধ্যমে মুখের ব্রণ দূর করা সম্ভব। ব্রণ হবার একটি অন্যতম কারণ হলো অপরিষ্কার ত্বক। তাই ত্বক রাখতে হবে পরিষ্কার। নিয়মিত স্ক্রাবিং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। টাকা পেঁপে চটকে নিন এক কাপ এর সাথে মেশন এক টেবিল চামচ লেবুর রস এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চালের গুড়া। 

মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরে লাগান। ২০ থেকে ২৫ মিনিট মাসাজ করে গোসল করে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস।পাকা পেঁপে ও চালের গুড়া ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করে। তাই আপনারা পেঁপের সাথে চালের গুড়া ব্যবহার করে মুখের ব্রণ দ্রুত দূর করতে পারেন।

মুলতানি মাটি ,নিম পাতা ও পুদিনা পাতা মাধ্যমে 

মুলতানি মাটি, নিমপাতা ও পুদিনা পাতা মুখের ব্রণ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। চার-পাঁচটা নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে মিশে নিন। এরপর এর মধ্যে এক চা চামচ মুলতানি মাটি অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। একটা যদি গাড়ো হয়ে যায় তাহলে এর মধ্যে গোলাপজল মিশিয়ে নিন।

মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিন, তারপর মিশ্রণটি মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে যেসব ফুসকুড়ি এবং ব্রন হয় সেগুলো দূর করতে পুদিনা পাতা অত্যন্ত উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা মেটে ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট এরপর ধুয়ে ফেলুন।


ব্রণ ও ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি পেতে কিছু পরামর্শ

ব্রণ ও ব্রণের দাগ থেকে মুক্তি পেতে কিছু পরামর্শ। প্রতিদিন ৯ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন। এছাড়াও প্রতিদিন রাতে খাবারের পর যে কোন ধরনের মৌসুমী ফল খান। এটি আপনার ত্বককে সতেজে রাখবে। যতটা সম্ভব তেল যুক্ত বা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার পরিহার করুন। তাছাড়াও বাইরে থেকে আসা মাত্রই মুখ ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আমাদের মধ্যে অনেকেই নখ দিয়ে ব্রণ খোটার বাজে অভ্যাস রয়েছে। আমাদের বুঝতে হবে এটা কোন সমাধান না। 

উল্টে দে ব্রণের অবস্থা আরো খারাপ হবে। এরপরে লালচে হয়ে যায় এবং এটি ফেটে মুখের দাগের সৃষ্টি হয়। যারা বহুদিন যাবত গ্রহণ ও গ্রহণের দাগ সমুখাই ভুগছেন, কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না তারা হাত দেরি না করে অতি শীঘ্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। তবে ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করতে উপরে বর্ণিত ঘরোয়া টিপস ও উপায়সমূহ পরীক্ষামূলক করে দেখতে পারেন আগে।

লেখকের শেষ মন্তব্য 

এলোভেরা, লেবুর রস এবং হলুদের মত প্রধান গুলি কার্যকর ত্বক নিরাময় করে, দাগ দূর করে এবং আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুনরুদ্ধার করে। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে প্রত্যেকের ত্বক আলাদা, তাই একজন ব্যক্তির জন্য যা দ্রুত কাজ করে তা অন্যের ক্ষেত্রে বেশি সময় নিতে পারে। তাই উপরে টিপস গুলো নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনি আপনার মুখের ব্রণ অতি দ্রুত দূর করতে পারেন।

আর আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের কাছে শেয়ার করে দিন এবং আপনি নিজেও সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। আমার এ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন