বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা
বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা
বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে চান তাহলে আমার এ আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য, আপনারা অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আমারে আর্টিকেলে বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
বিটরুট একটি সবজি যে সবজি প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিতে ভরা। এটি একটি শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমানে বাজারে সব সিজনে দেখা যায়। বিটরুট কে সুপার ফুড বলা হয়, কারণ এটি একটি ওষুধি গুণে গুণান্বিত সবজি যার পুষ্টিগুণ অনেক। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আপনারা বিটরুট রাখতে পারেন।
পেজ সূচিপত্র: উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে
- উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে
- বিটরুট হজম শক্তি বাড়ায়
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
- হৃদরোগ প্রতিরোধে কাজ করে
- বিটরুট কারা খাবেন না
- বিটরুট এর পুষ্টি উপাদান সমূহ
- বিটরুট খাওয়ার নিয়ম
- বিট রুটের জুস
- বিট রুটের সালাদ
- বিট রুটের হালুয়া
- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা
- লেখকের শেষ মন্তব্য
উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে
বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা অনেক। রক্তস্বল্পতা, বিশেষত নারীদের মধ্যে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। বিটরুট আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায় এবং লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফোলেট গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এটি গর্ভবতী অবস্থায় শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করে। বিশেষত, যারা ক্লান্তি বা দুর্বলতায় ভোগেন তাদের জন্য বিটরুট একটি প্রাকৃতিক সমাধান।
আরো পড়ুন:
এটি রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে ও রক্তস্বল্পতা দূর করে। বিটরুটের উচ্চ নাইট্রেট উপাদান শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়, যা শরীরের ক্লান্তি কমায় এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে অ্যাথলেটিক্সের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী, কারণ এটি শরীরের কর্মক্ষমতা এবং শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
বিটরুট হজম শক্তি বাড়ায়
বিটরুটে রয়েছে ফাইবার, যা হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এটি পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত বিটরুট খাওয়ার অভ্যাস করুন। হজম শক্তি বাড়াতে বিটরুট অত্যন্ত কার্যকরী। এজন্য প্রতিদিন বিট রুট খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভালো।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে থাকে। তবে বিটরুট খেলে মস্তিষ্কের রক্ত এবং অক্সিজেন সরবরাহ বারে যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বিটরুটে থাকা নাইট্রেট মস্তিষ্কের নিউরনের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার্স রোগ প্রতিরোধ করে।
মানুষের বয়সে সাথে সাথে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। এমন একটা সময় আসবে যখন মানুষ ভুলে যেতে থাকে। এক কাপ বিটরুটের জুস খেলে কিন্তু এই সমস্যাগুলো দূর করা। এতে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল সঠিকভাবে বানিয়ে দেয় এবং ব্লাড প্রেসার কে কমিয়ে সঠিক রাখতে সাহায্য করে ।
হৃদরোগ প্রতিরোধে কাজ করে
হার্ট বা হৃৎপিণ্ড আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, এবং এটি সুস্থ রাখতে বিটরুট এর ভূমিকা অন্যতম। বিটরুটে থাকা নাইট্রেট রক্তনালী গুলিকে প্রসারিত করে যা রক্তচাপ কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও বিটরুটে থাকা পটাশিয়াম হৃদ যন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া এটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি হাস করে।
আরো পড়ুন:
গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত বিটরুট খেলে স্টক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়। বিটরুট পাউডারের উপকারিতা অনেক তাই প্রতিদিন আমাদের ভিডিও পাউডার খাওয়া প্রয়োজন। তাই প্রতিদিন বিটরুট পাউডার খাওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে পারি।
বিটরুট কারা খাবেন না
বিট রোড শরীরের পক্ষে খুব ভালো একটি সবজি। কিন্তু অতিরিক্ত বিটরুট খাওয়া ঠিক নয় কারণ এতে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। তাই বিট রুট নিয়মিত না খেয়ে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন খাওয়া ভালো। তাছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা বিটরুট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ বিট রুটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি থাকে যার রক্তের শর্করা মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
তাছাড়াও যাদের কিডনিতে পাথর আছে তারা বিটরুট খাবেন না। বিটরুটে অনেকেরই এলার্জি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বিটরুট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এছাড়াও যারা বিটরুট খেতে চান তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন।
বিটরুট এর পুষ্টি উপাদান সমূহ
বিট রুটে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। আরো রয়েছে আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, আয়োডিন ইত্যাদি। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়াও বিটরুটের পাউডার এর উপকারিতা অনেক তাই আমরা নিয়মিত বিট রুটের পাউডার খাওয়ার মাধ্যমে আমরা শরীরকে সুস্থ রাখতে পারি।
বিটরুট খাওয়ার নিয়ম
বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে। এই সবজি টা এখন প্রায় সব সময় দেখা যায়,তবে মানুষ এটা কম খায়। আপনার যারা বিট রুট সম্পর্কে জানেন না তারা রান্নার রেসিপি দেখে বা সালাদ ও রান্না করে খেলে অনেক উপকার পাবেন। তাছাড়াও বিটরুট জুস হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে। তাই নিয়মিত বিটরুট সেবন করার মাধ্যমে আমরা শরীরের জন্য অনেক উপকার পেয়ে থাকি।
বিট রুটের জুস
বিট রুটের জুস বানানোর জন্য এক কাপ বিটরুট, এক চামচ লেবুর রস, মধু ২ চামচ, এবং টক দই ২ চামচ নিয়ে প্রথমে বিটরুট ধুয়ে ভালো করে কুচি করে নিতে হবে, তারপর ব্লেন্ড করতে হবে। তারপর বাকি যত উপকরণ আছে সবগুলোই ব্লেন্ডারে ভালো করে পিছিয়ে নিয়ে ছেকে পান করতে হবে।
বিট রুটের সালাদ
একটি পাত্রে বিট রোড সিদ্ধ করে টক দই, এক চিমটি গোল মরিচ, একটা চামচ ধনে পাতার কুচি, আজতো সরিষা পরিমাণ মতো এবং কারি পাতা ও অন্যান্য মশলা সবগুলো দিয়ে ভালো করে চামচ দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিন। একটি পাত্রে গরম তেল দিয়ে আজতো সরিষা ও জিরে ফোড়ন দিয়ে ভালো করে নাচতে থাকুন। এবার সরিষা ও ফোড়ন এর মধ্যে দিয়ে ভালো করে মিশালে তৈরি হয়ে যাবে সালাদ।
বিট রুটের হালুয়া
বিদ্যুৎ হালুয়ার জন্য উপকরণ লাগবে যেমন-বিটরুটের কুচি দুই কাপ, দুধ দুই কাপ, ঘি দুই কাপ, পরিমাণ মতো চিনি বা খেজুরের গুড়, পেস্তা বাদাম বা কাঠবাদাম এবং নারিকেল কুচি। একটি পাত্রে বিটরুট দিয়ে মাঝারি আছে দুই কাপ দুধ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। আপনারা যদি খেজুরের গুড় দিয়ে পছন্দ করেন খেতে তবে চিনির বদলে খেজুরের গুড় দিতে পারেন। এরপর আর নারকেল গুড়া দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে থাকুন। তারপর হালুয়া তৈরি হয়ে আসলে বাদাম কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। কাঁচা বিটরুট বিভিন্ন রকম রান্নাতেও সবজি সাথে দিয়েও রান্না করা যায়। কাঁচা বিটরুট কুচি করে কেটে ভাজি করলেও খেতে ভালো লাগে।।
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভ অবস্থায় বিটরুট খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। বিটরুট এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি থাকায় এই চাহিদা অনেক বেশি। গর্ব অবস্থায় বিটরুট খেলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা গর্ভ অবস্থায় যে আয়রনের প্রয়োজন হয় সেই ঘাটতি টাই পূরণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভবতী নারীর ওজন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। শরীরের শক্তি জগতের বিট রুট অনেক বেশি ভালো কাজ করে।
বিট রুট শরীরের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে। গর্ব অবস্থায় অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে যা বিটরুট খাওয়ার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। বিটরুটে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার কারণে গর্ভ অবস্থায় বিটরুট খেলে শরীরের অনেক ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাই গর্ভ অবস্থায় নিয়মিত বিট রুট খাওয়া অনেক উপকারী।
লেখকের শেষ মন্তব্য
আমরা অনেকেই বিটরুট খেতে পছন্দ করি না। কিন্তু এই বিট রুটেই রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। তাই নিয়মিত বিটরুট বা বিট রুটের পাউডার খাওয়া আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের জন্য অনেক উপকারী। আশা করি আমার এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে।
আমি আপনাদেরকে বুঝাতে পেরেছি বিট রুটের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আমার এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন এবং অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।